কিছু সংকল্প থেকেই যায় মনের মধ্যে। দু'কলম না লিখে বাঙালী, বাঙালী হয়ে ওঠেনি এমন নিদর্শন হাতে গোনা। কলমচি হয়ে ওঠার স্বপ্নও আমাদের মধ্যে অধিকাংশ বাঙালীর ছোটবেলা থেকেই বহন করে আসা, অনেকটা যেন সেই রূপকথার গল্পের রাজকুমার, অর্ধেক রাজত্ব আর রাজকন্যের মতোই। কাব্য ও সাহিত্য যেখানে রক্ত মজ্জায় অস্থিতে বিচরণ করে সেখানে কিছু স্বপ্ন তো সবকিছু হারিয়েও থেকেই যায়, আর একই সঙ্গে হয়ে ওঠে সংকল্প। নব্য বাঙালীর লেখক কবি ও সাহিত্যিক হয়ে ওঠার স্বপ্ন, পালাবদল করে এসেছে যুগের সাথে হাত মিলিয়েই। আর যুগের পর যুগ ধরে জন্ম নিয়েছে ভূপতিবাবুরা ; হ্যাঁ সম্পাদক হবার স্বপ্ন। সে স্বপ্ন আমারও ছিল, আছেও। হয়তো চিতাকাঠে পাশ ফিরে শোবার আগে অব্দি থেকেও যাবে। যদিও কলমের থেকে তুলি আমার কাছে অনেক বেশী রকমের সাবলীল, তবুও কলম মাঝে মাঝেই কিংবা প্রায়শই দিস্তে খাতার ওজন বাড়ায়।
সাহিত্যিক বা কবি হয়ে ওঠা হয়না অনেকেরই পরিবর্তিত সময়ের সাথে সাথে, যেমন বদলে যায় স্বপ্ন। যারা অক্ষর ভালোবেসে আজও লিখে যাচ্ছেন পাতার পর পাতা, তাঁদের মধ্যেই আমরা খুঁজে ফিরি নতুন প্রজন্মের কলমচি। হ্যাঁ সংকল্প যদি কিছু থাকে তা হ’ল নতুন সাহিত্যিকের আলোকপাত। কনটেম্পোরারি ওয়েভ লেন্থ, কথাটা বস্তুতই খাঁটি একটি কথা। সময়কে ধরে না রাখতে পারলে সাহিত্যের মূল্যায়ণ কোথায় ! শুধুই কি সাহিত্য ! না একই সঙ্গে চারুকলা শিল্প, বাক্ শিল্প, নাট্য সঙ্গীত সবকিছুর প্রতি আলোকপাতের বেসাতী সাজিয়ে বসে আছে রা’ প্রকাশন। যদিও রা’ অর্থে কথা, তবুও রা’ মানে আমরা। আমরা মানে সবাই। একত্রিত। হ্যাঁ অনেকটা যৌথ খামারের মতই, একের সাথে একে হাত ধরে এগিয়ে চলা। সম্পূর্ণ পারস্পরিক মেলবন্ধন। এখানে একক আমরা কেউ নই ; কোরাস। নতুন মুখের কলমচিরাই আমাদের সম্পদ। একই সঙ্গে প্রতিষ্ঠিত কলমের ছায়াতেও আমাদের স্থায়ী বসবাস।
দুটি ত্রৈমাসিক ও একটি মাসিক পত্রিকা, যা আমাদের লেখনী খুঁজে নেবার আতসকাঁচ। একই সঙ্গে মুদ্রণ ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়া দুই ধারাতেই আমাদের বই প্রকাশিত হয়। একই ভাবে প্রকাশিত হয় পত্রিকাগুলিও। না, তথাকথিত প্রকাশক বলতে প্রথমেই যে ছবিটি ভেসে ওঠে চোখের সামনে রা’ বোধহয় তেমন নয়। হলফ করে বলতে পারি না ঠিকই, কিন্তু একটি আত্মবিশ্বাস তো আছেই যেখানে দশ জনের মধ্যে একজন না, একেবারেই আলাদা হয়ে ওঠার সংকল্প এবং প্রতিশ্রুতি। একদিকে যেমন লেখকের জন্য আমাদের প্রকল্প তেমনই কিছু প্রকল্প পাঠকের জন্যও। একটি প্রকাশনার কাছে পাঠক এবং লেখক দুই-ই আসলে মূলধন, আর এমনটা ভেবেই প্রজ্বলিত করে তুলতে চাই আমাদের বৈঠকখানার বেলোয়ারী ঝাড়বাতিটি। আপনাদের সবার ভালোবাসায় আমাদের এগিয়ে চলা। একক ভাবে আলোকিত নয়, আমরা আলোকিত হতে চাই সকলের সাথে। শুধু আমি মাত্র শব্দটি নয়, আমাদের মূল মন্ত্র ‘আ ম রা’ – এই আমাদের একমাত্র সংকল্প ও উল্লাস।